মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দেশীয় মৌসুমি ফল রক্ষায় নিজ উদ্যোগে ও সম্পূর্ণ নিজ খরচায় ফল বিনষ্টকারী প্রাণী কাঠবিড়ালী নিধন করে ব্যাপক আলোচনায় আব্দুল লতিফ (৮৫) নামে এক বৃদ্ধ। তিনি উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের উত্তর প্রতাপপুর (বহ্মপুর) গ্রামের মৃত আফসার উদ্দিনের ছেলে বলে জানা গেছে। ৮৫ বছর বয়সেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি ব্যতিক্রমী এমন কাজ করে স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন এখন।
সরেজমিন গিয়ে বৃদ্ধ আব্দুল লতিফের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ নিজ বাড়ীর নারিকেল গাছের একটি নারিকেল বা ডাব খেতে না পারার আক্ষেপ থেকে তিনি কাঠবিড়ালী নিধনের উদ্যোগ নেন। প্রথম দিকে মাত্র দু’টি ম্যানুয়াল কাঠবিড়ালী নিধন কল দিয়ে বিভিন্ন গাছে ফাঁদ পেতে কাঠবিড়ালী নিধন কাজ শুরু করেন। কলা সহ দেশীয় বিভিন্ন ফল দিয়ে বিরামহীনভাবে প্রায় প্রতিদিনই তিনি গাছে গাছে এ ফাঁদ পাততেন। অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে টানা ৬ মাস সাধনা ও চেষ্টার ফলে শুধু নিজ গ্রামেই এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪০টি কাঠবিড়ালী নিধন করতে সক্ষম হন তিনি। এ কাজে তাকে এলাকার যুব সমাজ কিছুটা সহযোগিতা করেছে বলেও জানান তিনি। তবে, বেশিরভাগ সময় তিনি একটি শুকনো বাঁশের লাঠির সহায়তায় এ নিধন কাজ চালিয়েছেন। কাঠবিড়ালী নিধনের ফলে বর্তমানে এলাকার প্রায় প্রতিটি গাছে নারিকেল, কলা, পেয়ারা, কাঁঠাল সহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল দেখা যাচ্ছে। এর আগে এ ফলগুলো খেতে না পেরে স্থানীয়দের আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না বলে জানা গেছে। দেশী ফল রক্ষায় বৃদ্ধ এমন ব্যতিক্রমী কাজের জন্য এলাকাবাসীর বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে উত্তর প্রতাপপুর (বহ্মপুর) গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক মো: শাহ আলম ও নাইমুল হক সহ স্থানীয়রা জানান, কাঠবিড়ালীর অত্যাচারে আমাদের গ্রামের কেউই অনেক বছর ধরে একটি দেশীয় ফল খেতে পারিনি। আব্দুল লতিফ সাহেবের উদ্যোগে কাঠবিড়ালী নিধন কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় এখন আমাদের গ্রাম কাঠবিড়ালী মুক্ত। আজ গ্রামের প্রায় প্রতিটি গাছেই দেশীয় ফলের বিপুল সমাহার দেখা যাচ্ছে। উনার এ প্রশংসনীয় কাজের জন্য আমরা তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। উনার দেখাদেখি আশেপাশের গ্রামের অনেকেই এখন এমন উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে জানতে পেরেছি। আমরা উনাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গর্ববোধ করি।